করোনা মহামারির কারণে টানা দুই বছর বন্ধ থাকার পর ১৩ জানুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
২০২০ সালে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর করোনা-১৯ মহামারির কারণে গত দুই বছর ২০২১ ও ২০২২ সালে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়নি।
২০২৩ এ ইলমি শূরার তত্ত্বাবধানে (জুবায়েরপন্থি) অনুষ্ঠিত তিন দিনের ইজতেমাকে ঘিরে টঙ্গী ও আশপাশ এলাকায় ধর্মীয় উৎসব আমেজ বিরাজ করছে। প্রতি বছর ইজতেমায় ঢাকা জেলার সাথীরা সবার শেষে তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তার কাজ করে থাকেন। এবারো শুধু ঢাকা জেলার মুসল্লিদের জন্য নির্ধারিত খিত্তার স্থান বাদে অন্য সব কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে।
তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের বিবাদের কারণে এবারও আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, তাবলিগ জামাতের সাবেক আমির মাওলানা সাদ কান্ধলভীর বিরোধী হিসেবে পরিচিত মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীরা ১৩, ১৪ ও ১৫ জানুয়ারি ইজতেমা করবেন।
আর সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমা করবেন ২০, ২১ ও ২২ জানুয়ারি।
আরো পোস্ট পড়ুন
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ময়দানের পশ্চিম পাশে তুরাগ নদের পূর্বপাড়ে নামাজের মিম্বর ও উত্তর-পশ্চিম কোণে বিদেশি মেহমানদের জন্য নির্ধারিত কামরার পাশে বয়ান মঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে।
এছাড়াও ছামিয়ানা টানানো, বিদ্যুৎ ও মাইক সংযোগের জন্য তার টানানোসহ তাশকিল কামরা, জুড়নেওয়ালি জামাতের কামরা, বধিরদের বয়ান শোনার জন্য পৃথক কামরা তৈরি করা হচ্ছে।
আগামী বৃহস্পতিবারের (১২ জানুয়ারি) মধ্যেই দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি ময়দানে এসে তাদের জন্য নির্ধারিত খিত্তায় অবস্থান নেবেন।
ময়দানে প্রথম পর্বে খিত্তাভিত্তিক মুসল্লিদের অবস্থান
এ বছর প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা যে সমস্ত খিত্তায় অবস্থান করবেন তা হলো-
গাজীপুর (১), টঙ্গী (২, ৩ ও ৪),
ঢাকা (৫, ১৮, ২১, ২২, ২৫, ২৭, ২৮, ৩০),
রাজশাহী (১৯), চাঁপাইনবাবগঞ্জ (২০)
নাটোর (২৩), নওগাঁ (২৪)
নড়াইল (২৬), সিরাজগঞ্জ (২৯)
টাঙ্গাইল (৩১), রংপুর (৩২)
গাইবান্ধা (৩৩), লালমনিরহাট (৩৪)
মুন্সীগঞ্জ (৩৫), যশোর (৩৬)
নীলফামারী (৩৭), বগুড়া (৩৮)
জয়পুরহাট (৩৯), নারায়ণগঞ্জ (৪০)
ফরিদপুর (৪১), ভোলা (৪২)
নরসিংদী (৪৩), সাতক্ষীরা (৪৪)
বাগেরহাট (৪৫), কুষ্টিয়া (৪৬)
মেহেরপুর (৪৭), চুয়াডাঙ্গা (৪৮)
ময়মনসিংহ (৪৯, ৫১), শেরপুর (৫০)
জামালপুর (৫২), গোপালগঞ্জ (৫৩)
কিশোরগঞ্জ (৫৪), নেত্রকোনা (৫৫)
ঝালকাঠি (৫৬), বান্দরবান (৫৭)
বরিশাল (৫৮), পিরোজপুর (৫৯)
হবিগঞ্জ (৬০), কক্সবাজার (৬১)
সিলেট (৬২), সুনামগঞ্জ (৬৩)
ফেনী (৬৪), নোয়াখালী (৬৫)
লক্ষ্মীপুর (৬৬), চাঁদপুর (৬৭)
ব্রাহ্মণবাড়িয়া (৬৮), খুলনা (৬৯)
পটুয়াখালী (৭০), বরগুনা (৭১)
চট্টগ্রাম (৭৪), কুমিল্লা (৭৫)
তুরাগ নদের পশ্চিমপাড় কাঁচাবাজারে মৌলভীবাজার (৭৬), রাজবাড়ী (৭৭)
মাদারীপুর (৭৮), শরীয়তপুর (৭৯)
মানিকগঞ্জ (৮০, সাফা টাওয়ার)
রাঙ্গামাটি (৮১), খাগড়াছড়ি (৮২)
দিনাজপুর (৮৩), পাবনা (৮৪)
ঠাকুরগাঁও (৮৫), ঝিনাইদহ (৮৭, যমুনা প্লট)
মাগুরা (৮৮, যমুনা প্লট)
কুড়িগ্রাম (৮৯, কামারপাড়া বেড়িবাঁধ বঙ্গবন্ধু মাঠ),
পঞ্চগড়ের (৯০ কামারপাড়া হাইস্কুল মাঠ-বধির স্কুল ভবন) জন্য নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নিয়ে ইবাদত বন্দেগিতে মশগুল থাকবেন।
এছাড়াও ময়দানের চারপাশে ১১ ও ১২নং খিত্তার কিয়দংশ, ৩২ ও ৩৭নং খিত্তার মাঝামাঝি ১২নং, ৭২, ৭৩, ৮৬ ও ৯১নং খিত্তাগুলো সংরক্ষিত হিসেবে রাখা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন বিশ্ব ইজতেমা আয়োজক কমিটির শীর্ষ মুরব্বি ডা. খান মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন।
মুসল্লিদের নিরাপত্তায় পুরো ময়দানে প্রায় ৩শ ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা
ইজতেমা ময়দানে আগত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের নিরাপত্তায় পুরো ময়দানে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে প্রায় তিন শতাধিক ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে। সিসিটিভির মাধ্যমে কন্ট্রোল রুম থেকে পুরো ময়দানের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন টঙ্গী পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ আলম।
প্রসঙ্গত, ১৩ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১৫ জানুয়ারি রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্বের (উলামায়ে কেরামের) বিশ্ব ইজতেমা সমাপ্তি ঘটবে।
মাঝে ৪ দিন বিরতি দিয়ে ২০ জানুয়ারি (মাওলানা সাদপন্থি) মুসল্লিরা বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবেন।
২২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে এবারের বিশ্ব ইজতেমার পরিসমাপ্তি ঘটবে।
২০২৩ সালের বিশ্ব ইজতেমার ম্যাপ৷
ম্যাপ বুঝার সহজ নিয়ম হলো,
প্রথমে আপনার পশ্চিম দিক ঠিক করুন, এর পর ম্যাপে এর দেওয়া পশ্চিম দিক অনুযায়ী মোবাইলটাকে রাখুন,
তাহলেই সঠিক ভাবে সব দিক খুজে পাবেন। 🙂
ছবিতে দেওয়া খিত্তাহ নাম্বার বুঝা না গেলে উপর থেকে দেখে নিন
এডমিনঃ কওমী কলম